পাঠক তৈরির কারিগর ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ, ছিলেন কথার জাদুকর। তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ তার পাঠক। তিনি আজ বেঁচে নেই কিন্তু এখনও লাখো পাঠক তার জন্য কাঁদেন।
নন্দিত এই কথাশিল্পীর ৬ষ্ঠ প্রয়াণ দিবস আজ। তিনি প্রয়াত হয়েছেন ২০১২ সালের ১৯ জুলাই। চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের মানুষের প্রার্থনা ছিল তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন। সেই প্রার্থনা পূরণ হয়নি। তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। কিন্তু এখনও রাজত্ব চলছে তার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক, ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ।
তিনি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। লেখায় বহুমুখী প্রতিভার যে সৌরভ ছড়িয়ে গেছেন, তা আজো অম্লান।
হুমায়ূন আহমেদ যে হারিয়ে যাননি তা যে কোনো বইমেলায় গেলে আজো বোঝা যায়। পাঠকের হৃদয়ে তিনি অনেক অনেক দিন বেঁচে থাকবেন। তার বইয়ের ভেতর দিয়ে, সৃষ্টির ভেতর দিয়ে তিনি সবসময় বেঁচে থাকবেন।
প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আজ কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে নুহাশপল্লীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ ভোরে স্যারের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও সন্তান নুহাশ, নিষাদ, নিনিত নুহাশ পল্লীতে গেছেন। ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। নুহাশপল্লীতে কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। নুহাশপল্লীর আশপাশের মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্র, পরিবারের সদস্য এবং হুমায়ুন আহমেদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন লেখকসহ প্রায় ৬শ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, ইতিমধ্যে প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের কবর জিয়ারত ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী নুহাশপল্লীতে আসছেন। বিশেষ করে হুমায়ূন ভক্ত তরুণ প্রজন্মের অনেক শিক্ষার্থীরা নুহাশপল্লীতে ভিড় করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকও আসছেন নূহাশ পল্লীতে।
হুমায়ূন আহমেদের শরীরে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান। ২০১২ সালের ১৬ জুলাই চলে যান লাইফ সাপোর্টে। সে অবস্থাতেই ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে এগারোটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রিয় লেখকের মৃত্যুতে পুরো দেশে শোকের ছায়া নেমে আসে।
হুমায়ূন আহমেদের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে। ডাক নাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা, আর মা ছিলেন গৃহিণী।